শতবর্ষী আশুরা মেলায় মানুষের ঢল
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: প্রবাসী আজগর আলী তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে মেলায় এসেছেন। বাচ্চাদের জন্য খেলনা ও বাড়ির সদস্যদের জন্য নানা রকম খাবার কিনেছেন। প্রবাসে কর্মস্থলে থাকার কারণে প্রতিবছর এই মেলা উপভোগ করতে পারেন না। এবার দেশে থাকায় পরিবারের শিশুদের নিয়ে মেলায় এসেছেন।পবিত্র আশুরা উপলক্ষে প্রতি বছর হিজরি সনের ১০ মহরম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় একটি দীঘিকে ঘিরে আয়োজন হয় এ মেলার। স্থানীয়ভাবে এটি “মঞ্জিল” নামে পরিচিত। প্রতি বছরের মতো এবছরও এটির আয়োজন হয়।৬ জুলাই রোববার দিনব্যাপী রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইছামতী বড় দীঘির পাশে এই মেলার পাশাপাশি বিকেলে জারি গানের আসরও বসে। পরীর দীঘি নামেও পরিচিত এই দীঘি। সন্ধ্যায় মেলার আয়োজন শেষ হয়। শত শত বছরের পুরনো একদিনের এই মেলাতে হাজার হাজার শিশুসহ সব বয়সীরা ভিড় করেন। দীঘির পাড়ে রয়েছে রাহাতিয়া দরবার নামে একটি মাজার ।স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ ও মাজারের সংশ্লিষ্টরা জানান, শত বছর আগে ১০ মহরম কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা নিয়ে জারি হতো এখানে। জারিতে লোকজন সমবেত হলে এখানে ছোট ছোট খাবারের দোকান বসে। পরবর্তীতে এটি বড় মেলাতে রূপ নেয়। তবে এখানে শত বছর আগে রাহাতিয়া দরবার নামে মাজারে কারবালা মাহফিল হতো। মাহফিলে বড় বড় পাত্রে শরবতের আয়োজন এটি ঐতিহ্য। এটির প্রচলন এখনো রয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাওন বলেন, কথিত আছে শত শত বছর আগে এলাকায় বিয়ে, ধর্মীয় কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান হলে বিশাল এই দীঘি থেকে বিভিন্ন মূল্যবান ধাতুর হাঁড়ি, পাতিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উঠত। এগুলো দিয়ে অনুষ্ঠান করত এলাকার লোকজন। কোনো এক ব্যক্তি একটি চামচ রেখে দেয়ার পর থেকে এসব আর উঠে না। এই পরীর দীঘিকে ঘিরে বিভিন্ন কাহিনী এলাকায় প্রচলন আছে।মেলায় আসা মো. কাইয়ুম বলেন, প্রতি বছর পবিত্র আশুরা উপলক্ষে এ মেলাটি বসে। এবারও মেলায় বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ জারি গানের আসর হয়েছে। স্থানীয় শিল্পীরা জারি গান পরিবেশন করেছেন। জারি গান শুনতে তিনি মেলায় এসেছেন বলে জানান।দুই বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে আসেন শিক্ষক এম মোরশেদ আলম। পরিবারের ছোট সদস্যদের চাহিদামতো খেলনা কিনেছেন। বাড়ির সবার জন্য খাবার জিনিসও নিয়েছেন।