কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: অদম্য ইচ্ছাশক্তি, কঠোর পরিশ্রম আর সীমাহীন প্রতিকূলতার মাঝেও যে কেউ স্বপ্ন ছুঁতে পারে- তারই উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নলামারা গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী ঋতু রাণী পাল।
এসএসসি-২০২৫ পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে সে। যোগানিয়া ডি এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঋতু সাধারণ একটি টিনের ঘরে মা–বাবা ও ৩ ভাই বোন নিয়ে বসবাস করে। তার বাবা নারায়ণ চন্দ্র পাল কৃষি কাজ করে অনেক কষ্টে পরিবারের চাহিদা মেটান। এমন পরিস্থিতিতেও হাল না ছেড়ে ঋতু লড়াই চালিয়ে গেছে।
ঋতু’র বাবা নারায়ণ চন্দ্র পাল ও তার মা বলেন, ‘লেখা পড়ার প্রতি মেয়েটার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পেটে ভাত না থাকলেও বই ছাড়া থাকতে পারত না। আমি যতটুকু পেরেছি, করেছি। ধার-দেনা করেও চেষ্টা করেছি মেয়েটার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটা ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু ডাক্তার হওয়ার মাঝে একটাই বাঁধা দারিদ্র্য। আমার যেই অবস্থা মেয়েটা সামনে পড়ানোটা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ সাধ আর সাধ্যের মধ্যে দরিদ্রতা অনেক বড় একটি দূরত্ব করে রেখেছে।
ঋতু বলেন, ‘বাবা এখন পড়ালেখা চালানোর অবস্থায় নেই। মা-বাবা ও তিন বোন মিলে একটা ঘরেই থাকতে হয়। আমি ডাক্তার হতে চাই। কিন্তু কীভাবে সম্ভব হবে জানি না। বাবা আর পড়ালেখা চালাতে পারবে না। কারণ কলেজের পড়ালেখায় অনেক খরচ। হতভাগা দরিদ্রতার কারণে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। এ অবস্থা পড়া লেখা চালিয়ে নিতে এবং ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলঙ্গীর হোসেন বলেন, ঋতু সত্যিই অনুকরণীয়। কঠিন বাস্তবতায় থেকেও এমন ফলাফল বিরল। যোগানিয়া ডি এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময় স্কুল থেকে তাকে সহযোগিতা করেছি। যদি সহযোগিতা পায়, মেয়েটি অনেক দূর যেতে পারবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available