সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে একটি ব্রিজের অভাবে চরম ভোগান্তিতে আছেন উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের বড়কাটাসহ ৫টি গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের নিত্যদিনের সাথী বড়কাটা গ্রামের নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩ হাজার মানুষের আবাসস্থল কথিত বড়কাটা গ্রামেই রয়েছে দুটি মসজিদ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী বৈঠাখাই, এরুয়াখাই, তিলুরাকান্দি ও চকবাজার গ্রামের হাজারো মানুষ বছরজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ নড়বড়ে দীর্ঘ ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে সাঁকোটি আরও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত স্রোত বা পানিবৃদ্ধিতে সাঁকো তলিয়ে কিংবা হেলে পড়লে শিক্ষার্থী, রোগী, শিশু ও বৃদ্ধদের পারাপারে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
বড়কাটা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হেকিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘকাল ধরে এখানে একটা পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো ফল হয়নি। প্রতিবার নির্বাচনের আগে শুধু আশ্বাস পাই, পরে আর কেউ ফিরেও তাকায় না।”
শিক্ষার্থী রিমা আক্তার জানায়, ‘সাঁকোটা খুব সরু। ভারসাম্য হারালেই পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয়। বৃষ্টি-বাদলের দিনে সাঁকো পিচ্ছিল হলে তখন স্কুলে যাওয়া আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।”
বড়কাটা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘ওই অঞ্চলের জন্য এটি এক চরম অবিচার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছে সবাই। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, মানববন্ধন করেছি। কিন্তু এসব দেখার নেই কেউ।”
বৈঠাখাই বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী জামির হোসেন বলেন, ‘রোগী নিয়ে সাঁকো পার হতে গেলে খুব বিপদ হয়। বয়স্ক রোগী বা লোকজন স্ট্রেচার নিয়ে আসা-যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এখানে ব্রিজ না থাকায় আমাদের ব্যবসা, চিকিৎসা, সব কিছুতেই সমস্যা হচ্ছে।”
বড়কাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস শহীদ বলেন, “সেতু না থাকায় অনেক ছাত্র-ছাত্রী বর্ষা মৌসুমে স্কুলে আসতে পারে না। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় দারুণ ব্যাঘাত হচ্ছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপজেলায় অনেক উন্নয়ন হলেও এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের সমস্যা আজও সমাধান হয়নি। বারবার আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আমি আশাবাদী, খুব শিগগির সেটা বাস্তবায়ন হবে।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ জানান, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করব।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available