আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার সুইদা শহরে সিরিয়ান সরকারি বাহিনীর প্রবেশের পর ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব। সম্প্রতি দ্রুজ ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে দুই দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, ১৩ জুলাই রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দ্রুজ, বেদুইন, শিশুসহ সিরিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, সিরিয়ান বাহিনী ও তাদের অস্ত্রাগারকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে, কারণ তারা “দ্রুজদের বিরুদ্ধে তা ব্যবহার করতে যাচ্ছিল”।
তিনি আরও বলেন, সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে ইসরায়েলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে—বিশেষত যারা ইসরায়েল ও গোলান মালভূমিতে বসবাস করেন—তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, এটি সিরিয়ান সরকারের জন্য “সরাসরি সতর্কবার্তা”।
সিরিয়ার সরকার এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং জানিয়েছে, এতে সেনা সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তারা ইসরায়েলকে এ ঘটনার জন্য “সম্পূর্ণ দায়ী” বলে ঘোষণা করেছে।
গত শুক্রবার সুইদা-দামেস্ক মহাসড়কে এক দ্রুজ ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও লুটপাট করা হয়। এরপর রোববার, সশস্ত্র দ্রুজ যোদ্ধারা সুইদার আল-মাকওয়াস অঞ্চলে বেদুইন অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এর ফলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহর ও প্রদেশের অন্যান্য অংশে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাহিনী সুইদায় মোতায়েন করা হয়েছে। ১৪ জুলাই সোমবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও এর মধ্যেই সরকারি বাহিনীর হাতে ১৯ জন দ্রুজ বেসামরিক ব্যক্তি হত্যা এবং বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে এসওএইচআর।
১৫ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে ইসরায়েল সিরিয়ার একটি সামরিক কনভয়ে বিমান হামলা চালায়, যেখানে একজন সিরিয়ান নিরাপত্তা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এসওএইচআর।
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ইসরায়েল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হামলা বন্ধ করে বলে খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
দ্রুজ আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব সরকারকে প্রবেশ করতে অনুমতি দিলেও, পরে প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা শেইখ হিকমত আল-হাজরি এক ভিডিও বার্তায় সরকারি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আহ্বান জানান।
সোমবার ও মঙ্গলবার সিরিয়ার বাহিনী শহরে প্রবেশের পর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়, যা মানুষকে শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে বলে বিবিসি এরাবিককে জানান এক স্থানীয় বাসিন্দা।
এই পরিস্থিতিতে সুইদা শহরের পরিস্থিতি "দুর্যোগপূর্ণ" এবং সংঘর্ষ আরও জটিল আকার ধারণ করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available