স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে চুরি, ছিনতাই, খুন, ডাকাতিসহ বেড়ে গেছে অপরাধ প্রবণতা। সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। অবাধে চলছে মাদক ব্যবসা। এতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, গত ৪ মাসে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৯টি হত্যাকাণ্ডসহ ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ডাকাতি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় মাদক ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তার মোড়ে মোড়ে কিশোর গ্যাং সদস্যরা দিচ্ছে আড্ডা। করছে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
তথ্য মতে, চলতি বছরের ৮ এপ্রিল মিজমিজিতে ট্রিপল হত্যা, ৪ মে গোদনাইল এনায়েতনগরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে খুন হয় মো. ইয়াছিন (১৫) নামে এক কিশোর। ২৩ মে দক্ষিণ কদমতলী ভান্ডারীপুল ধনকুন্ডা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে খুন হয় আব্দুল্লাহ খান রায়হান ওরফে পাভেল (১৬)। ১৪ জুন পাইনাদি নতুন মহল্লায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেড়ে খুন হয় আবুল বাশার। ১৫ জুন হীরাঝিল ইসলামী ব্যাংক থেকে আদমজী ইপিজেডের ইমেস এসপি প্যাকেজিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ইলিয়াছ হোসেন ও হিসাবরক্ষক নুরুল ইসলামের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। ১৬ জুলাই পশ্চিম কলাবাগে মো. ইসমাইল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী শারীরিক প্রতিবন্ধী মিনু বেগমকে (৫৫) পিটিয়ে হত্যা করে তার সৎ ছেলেরা। চুরি টাকার ভাগবণ্টনের বিরোধে ১৮ জুলাই নিমাইকাশারী এলাকায় খুন হয় মাসুকুল ইসলাম জনি (৩০)। ২৫ জুলাই রাতে মিজমিজি বাতানপাড়া ক্যানেলপাড়ে ইব্রাহিমের বাড়িতে ইতি আক্তারকে (২৫) পিটিয়ে হত্যা করে স্বামী বিল্লাল হোসেন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হীরাঝিল এলাকার বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এত অবনতি হয়েছে যে, মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
আদমজী ইপিজেডের পোশাক কর্মী রাহিমা বেগম বলেন, খুন খারাবি ছিনতাই বেড়ে গেছে। বেতন নিয়ে বাসায় ফেরতে ভয় হয়। বেতনের টাকা ছিনতাই হয়ে যাওয়ায় আমার এক সহকর্মী ঘর ভাড়া দিতে পারেনি। ধার করে সংসার চালাচ্ছে।
মিজমিজি এলাকার ফয়সাল বলেন, প্রতিটি পাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে। দৃশ্যপট দেখে মনে হয় থানা এলাকায় মাদকের হাটে পরিণত হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা এমনভাবে বেড়েছে রাস্তায় চলা দায় হয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মাদ শাহিনূর আলম বলেন, যে সব মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি অপমৃত্যু। যে কয়টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তার সঙ্গে জড়িত মামলার অধিকাংশ আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। আমরা গুরুত্ব দিয়ে তাদের ধরার চেষ্টা করছি। মাদক ও কিশোর গ্যাং চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available