• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৯শে কার্তিক ১৪৩২ ভোর ০৫:১৯:০৬ (04-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:

নীতিমালা উপেক্ষা করে খোলাহাটি ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ

১৭ মার্চ ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪:২২

সংবাদ ছবি

বাদশাহ ওসমানী, রংপুর ব্যুরো: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালাকে উপেক্ষা করে ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে খোলাহাটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পদে মবিদুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Ad

অভিযোগে জানা যায়, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার খোলাাহাটি ডিগ্রী কলেজের ২০২২ প্রথম অধ্যক্ষের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পর একই বছরের ৭ জুলাই পত্রিকায় অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেজুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ এর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল অবকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ পরিশিষ্ট ঘ এর (খ) নং ছকের (১) ক্রমিক অনুযায়ী একজন অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর মবিদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন।

Ad
Ad

এ বিষয়ে ওই সময়ের খোলা হাটি ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব আবদুন নুর জানান, অধ্যক্ষ নিয়োগের আবেদনপত্রগুলো যাচাই বাছাই করে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার জন্য ডিজির প্রতিনিধি দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ফরিদা পারভীন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক (সমাজ বিজ্ঞান) সিরাজুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মনোনীত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি কলেজকে দেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেজুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ এর ৪ এবং ৫ ধারার উপধারাসমূহ কোনভাবেই লংঘন করা যাবে না এবং যারা ২০১৯ সালে সংশোধিত রেজুলেশন মোতাবেক অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ করেননি তাদেরকে প্রবেশপত্র দেওয়া যাবে না। এ শর্তের কারণে আবেদনকারী মবিদুল ইসলাম প্রবেশপত্র পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। কিন্তু তার এক ভাই মুহাম্মদ মতিউর রহমান বাবুল কলেজের প্রভাষক ও অপর ভাই মু. মুহসীন আলী রয়েল দাতা সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিকের চাপে মবিদুল ইসলামকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ওই সময়ের পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বর্তমানে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাঈল হোসেনের পরামর্শে জটিলতার মধ্যেও নিয়োগ পরীক্ষাটি হয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিজির নীতিমালার সাথে নিয়োগ কার্যক্রমটি সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো পেপার্সে স্বাক্ষর না দিয়ে চলে যান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম। এ কারণে নিয়োগটি আটকে যায়।

আবদুন নুর বলেন, বিধির বাইরে গিয়ে নিয়োগ প্রদানে আমিও আগ্রহী ছিলাম না। কিন্তু কলেজের শিক্ষক দুই ভাই ও উপজেলা চেয়ারম্যান মবিদুল ইসলামকেই অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে আবারও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র দেওয়া হয় ভবানীপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবরে। কিন্তু সেটা খোলাহাটি ডিগ্রী কলেজ বরাবরে না হওয়ায় আমরা আবারও ডিজি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আবেদন করি। সেখান থেকে আর কোনো সদুত্তর না পেয়ে সুবিধাভোগীদের চাপে পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে সভাপতি মবিদুল ইসলামকে অধ্যক্ষ হিসেবে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ করা হয়।

এই বিষয়ে কলেজের তৎকালীন গভর্নিং বডির সভাপতি ও বর্তমান নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিজ্ঞপ্তির তথ্যের ভিত্তিতে এবং মবিদুল ইসলাম পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ায় আমরা তাকে নিয়োগ দিয়েছি। বিধিতে কী আছে সেটি তাদের বিষয় বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে পরীক্ষা নিয়েছি। সেখানে বিধিমালায় অনেক সাংঘর্ষিক বিষয় ছিল। তাই আমি ওই সময় স্বাক্ষর না করেই এসেছি। পরবর্তীতে অনেকবার তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু আমি স্বাক্ষর দেইনি। তবে আমি যেহেতু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ছিলাম, সেই হিসেবে আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার মতামত পাঠিয়েছি। নিয়োগের বিষয়ে তারা কী করবেন, সেটি তাদের বিষয়।  

মবিদুল ইসলামকে অধ্যক্ষ নিয়োগদানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুন নুরকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে কলেজের দাতা সদস্য মহসিন আলী রয়েল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাপ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ৩ লক্ষ টাকা খরচ করে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণে ৩ মাসের মধ্যে যদি এই নিয়োগটি না হতো, তাহলে আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ৩ লক্ষ টাকা খরচ করতে হতো। কলেজ এত টাকা কই পাবে? তাই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে চাপ দেওয়া হয়েছিল।’

তবে মবিদুল ইসলাম অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে মহসিন আলী রয়েল তা অস্বীকার করে বলেন,  নিয়োগটি বিধিসম্মতভাবে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বর্তমান অধ্যক্ষ মবিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে খোলাহাটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছি। আমার নিয়োগ বৈধ না অবৈধ সেটি দেখার সাংবাদিক কে? আমার কর্তৃপক্ষ আছে তারাই বিষয়টি দেখবেন। আমি চতুর্থ গ্রেডে চাকরি করি। আমার মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি না করাই ভালো। সাংবাদিকরা আর আমার পিছনে না লেগে বড় বড় দুর্নীতিবাজ চোর-ডাকাতদের সংবাদ প্রকাশ করুক।”

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ






সংবাদ ছবি
কোন আসনে বিএনপির প্রার্থী কে, দেখে নিন
৩ নভেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৬:১৪


সংবাদ ছবি
ঠাকুরগাঁও-১ আসনে লড়বেন মির্জা ফখরুল
৩ নভেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৪:১১

সংবাদ ছবি
ঢাকাতে বিএনপির প্রার্থী হলেন যারা
৩ নভেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৪৬:২৮

সংবাদ ছবি
যে আসনে লড়বেন তারেক রহমান
৩ নভেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৬:৪৯


Follow Us