• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৮ই ভাদ্র ১৪৩২ রাত ০৮:১৬:২১ (02-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

আইন-আদালত

ঐতিহাসিক রায়: বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরল সুপ্রিম কোর্টে

২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ০২:৩৪:৫৯

সংবাদ ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি: বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সম্বলিত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের সংশোধনী ‘অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী’ ঘোষণা করে এবং বাহাত্তরের সংবিধানের মূল ১১৬ অনুচ্ছেদ বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ রায়ের ফলে অধস্তন আদালতে দায়িত্বপালনরত বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরে এলো।

২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রস্তাবনা অনুসারে তিন মাসের মধ্যে মধ্যে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রায়ে ‘বিচারকদের জন্য ২০১৭ সালে তৈরি করা শৃঙ্খলাবিধি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’ ঘোষণা করা হয়েছে। এ রায়ের ফলে এখন থেকে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি ও শৃঙ্খলা বিধানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টকে আর ধরনা দিতে হবে না।

আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী) হিসেবে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

আইনজীবী শিশির মনির পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ রায়ের ফলে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরে এলো। এখন থেকে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নামে বিচারকদের বদলি ও শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে আর কোনো নাটাই থাকল না। নির্ভয়ে তারা রায় দিতে পারবেন। রায় দেওয়ার পর নির্বাহী কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়ে রাতের আঁধারে বিচারকদের বদলির আর কোনো ভয় থাকল না। রায়টি একটি ঐতিহাসিক রায়।’

এর আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আহমেদ সোহেল।

গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজ (২ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করা হয়।

গত ২৩ এপ্রিল বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। গত ২০ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।

এর আগে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। তবে, গত ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সেই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। এরপর সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নতুন বেঞ্চ নির্ধারণের আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

তিনি গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে মূল সংবিধানের ১৯৭২ সালের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান– বিদ্যমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না?

বর্তমানে প্রযোজ্য (সংশোধিত) সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে।’ কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ‘বিচারকর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।’

বিদ্যমান সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি ও শৃঙ্খলাবিধির ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব রয়েছে, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

সংবাদ ছবি
রাজধানীর মৌচাকে মসজিদে আগুন
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৮:১০





সংবাদ ছবি
এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩ টাকা
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:০৩:০৭



সংবাদ ছবি
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি বুধবার
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৩:৫৭:১৮