নিজস্ব প্রতিবেদক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীরা ভারতে পালিয়ে থাকলে তাদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকা উচিত নয়, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

১৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে সংহতি জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন।


নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই লড়াই কেবল একজন নেতার হত্যার বিচার আদায়ের লড়াই নয়; এটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষার সংগ্রাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষ শুধু আওয়ামী লীগকেই নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও স্পষ্ট রায় দিয়েছে। ১৯৭১ সালের পর থেকেই পার্শ্ববর্তী দেশটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা করে আসছে। বাংলাদেশের প্রায় সব বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন এই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেই সংগঠিত হয়েছে।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর এই লড়াই থেকে পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
হাদির রাজনৈতিক ভূমিকার কথা স্মরণ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি এই শাহবাগ থেকেই তার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। তার লড়াই ছিল ভারতীয় ও বৈদেশিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা শুধু আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করিনি; বরং দেশে বিদ্যমান ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধেও জনগণ সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।’ তিনি এই আন্দোলনকে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে। তবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা বা গুলি চালানো হলে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘আন্দোলনের ভেতরের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে নাশকতার চেষ্টা হতে পারে। তাই জাতিকে বিভক্ত না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেন। দফায় দফায় স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শাহবাগ এলাকা। এতে ডাকসুর সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতারাও অংশ নেন।
এদিকে একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পৃথক বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সম্ভাব্য উত্তেজনা বিবেচনায় শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available