ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি : ঢাকা কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার, গঠনতন্ত্র প্রকাশ ও তফসিল ঘোষণার দাবিতে সমাবেশ করেছে ছাত্রসংসদ আন্দোলন। এ সময় অধ্যক্ষের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা ।
৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ৫ আগস্টের পর সকল শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল ছাত্রসংসদ নির্বাচন। কিন্তু এখনো ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ দেখছি না। ছাত্রসংসদের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করা যায়। পরে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করা অত্যন্ত লাভজনক একটা বিষয়। আমাদের অভ্যুত্থানের পরেই আমাদের এই দাবি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাষ্ট্র সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাম ডান সকল রাজনৈতিক সংগঠন ছাত্রসংসদ নির্বাচনের পক্ষে থাকার সত্ত্বেও কেন নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে না। অদৃশ্য এক পক্ষের কারণেই নির্বাচন হচ্ছে না।
যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন না দেয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল ইসলাম বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ , ৯০ এর গণ অভ্যুত্থান এবং ২৪শের জুলাই আন্দোলনসহ সকল সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে সম্মুখ সাড়িতে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজের ছাত্র সংসদকে বলা হয় থার্ড পার্লামেন্ট। প্রায় তিন দশক ধরে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। কেন এবং কারা এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে সেটা আমরা জানতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র সংসদ গণতন্ত্র চর্চার বিকাশ কেন্দ্র। ঢাকা কলেজে ছাত্রদের কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই দীর্ঘদিন ধরে। না থাকার কারণে আবাসন , ক্লাস রুম এবং লাইব্রেরি সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা তুলে ধরার মতো কোনো ফোরাম নেই। কলেজ প্রশাসন শুধু স্মারকলিপি গ্রহণ করছে। কিন্তু সেটার দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজের সাবেক সমন্বয়ক জিহাদ বলেন, আমরা যে নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা করেছিলাম বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ। যেখানে সবাই অধিকার বুঝে পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এক বছর পর আবারো আমাদের শহিদ মিনারের সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে অধিকার আদায়ের জন্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের যেমন সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে তেমনি দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ছাত্রসংসদ। আমরা মনে করি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের সৃজনশীল অধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া, চাওয়া পাওয়া, তাদের মতামত সকল কিছুর একমাত্র সেতুবন্ধন হল এই ছাত্রসংসদ। তাই আমরা প্রশাসনকে উদাত্ত আহ্বান জানাবো আমাদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণ অঞ্চলের সংগঠক রাকিব হাসান বলেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় বসেছে, তাদের প্রধান কাজ ছিল শিক্ষা সংস্কার করা। সেই সংস্কারের অন্যতম একটি হলো প্রত্যেকটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দেওয়া। কিন্তু তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ছাত্রসংসদ নির্বাচন বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কলেজ প্রশাসনকে আহ্বান করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। ডাকসুর নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে, ঢাকা কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচন কেন হবে না? আমরা কি এর বাহিরের? তাহলে আমাদের দাবি কেন বাস্তবায়ন করা হবে না? যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় করা না হয় তাহলে প্রশাসনের মধ্যে যারা আওয়ামী দোসর আছে তাদের বিতারিত করবো ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available