কুমিল্লায় অটোরিকশায় পাওয়া ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিলেন চালক
কুমিল্লা প্রতিনিধি: সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কুমিল্লার এক অটোরিকশা চালক। যাত্রীর ফেলে যাওয়া ব্যাগে থাকা প্রায় ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসার দাবিদার হয়েছেন চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা অটোচালক অনিক।১৭ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে। এক অভিভাবক তাড়াহুড়ায় সন্তানকে স্কুলে পৌঁছাতে গিয়ে একটি অটোরিকশায় তার টাকা ভর্তি ব্যাগ রেখে নেমে যান। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি ফিরে এসে অটোরিকশাটিকে আর খুঁজে পাননি।প্রায় ৩০-৪০ মিনিট পর ওই যাত্রী অবাক হয়ে দেখেন, একই অটোরিকশাচালক নিজেই তার বাসার আশপাশে এসে খুঁজছেন তাকে। পরে সবার সামনে অক্ষত অবস্থায় ব্যাগটি ফেরত দেন চালক অনিক।অনিক জানান, “ব্যাগে এত টাকা দেখে আমি প্রথমেই আমার বাবাকে কল দেই। তিনি বললেন, ‘যার জিনিস, তাকে খুঁজে দিয়ে আয়। হারাম টাকা নিয়ে বাঁচতে চাই না।’ আমি এরপর কয়েকবার ঘুরে ওই এলাকায় এসে শেষমেশ ব্যাগের মালিককে খুঁজে পাই।”জানা যায়, অনিকের বাবা নিজেও একজন অটোরিকশা চালক। তাদের পরিবারে সততা ও নৈতিকতার চর্চা বহুদিনের। আর তাই ১৫ লাখ টাকার মতো বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়ার পরও এক মুহূর্তের জন্যও লোভ স্পর্শ করেনি অনিককে।স্বর্ণব্যবসায়ী মরণ শীল বলেন, সকালে বাচ্চাকে স্কুলে দিতে যাওয়ার সময় ব্যবসার কাজের জন্য ১৫ লাখ টাকাসহ ব্যাগটি সঙ্গে নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু রিকশা (ইজিবাইক) থেকে নামার সময় ব্যাগটি ভুলে রিকশায় রয়ে যায়। কিন্তু স্কুল থেকে ফিরে যখন দেখি চালক ও রিকশা কোনোটাই সেখানে নেই, তখন খুব টেনশনে পড়ে যাই। অনেক খুঁজেও তাকে না পেয়ে বাসায় ফিরতে শুরু করি। কিন্তু বাসার কাছে এসে দেখি সে (চালক) দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে পেয়ে সে আমার টাকা আমাকে বুঝিয়ে দেয়।আজকের দিনে এসে সে যে কাজটি করেছে, তা একেবারেই বিরল ঘটনা। সততার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নিঃসন্দেহে সে একজন সৎ মানুষ। অন্যের টাকার প্রতি তার কোনো লোভ নেই। পৃথিবীতে এ ধরনের মানুষ এখনো আছে বলেই পৃথিবী এখনো সুন্দর। এমন মানুষদের সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব।