• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১৮ই ভাদ্র ১৪৩২ রাত ০৩:০৫:০৮ (03-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

তিস্তায় পানি কমলেও নতুন শঙ্কা নদীভাঙন

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলায় এবারের বর্ষা মৌসুমে পরপর চার দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর এখন তা কমতে শুরু করেছে। এতে মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ফসলের বিপুল ক্ষতি ও নদীভাঙনের নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।১৬ আগস্ট শনিবার দুপুর ২টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার একই সময়ে যা ছিল বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপরে। অর্থাৎ মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় পানি কমেছে ৫৩ সেন্টিমিটার।পানি কমতে শুরু করায় ডিমলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে কেউ ঘরবাড়ি পরিষ্কার করছেন, আবার কেউ বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় আছেন। তবে পরপর চার দফা বন্যায় রোপা আমনসহ নানা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫৪৩ একর আমন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবজি বাগান ও অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও ক্ষতি হয়েছে।কৃষকরা জানান, এবারের বন্যায় ধান রোপণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গবাদি পশুর জন্য শুকনো খড় নষ্ট হওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মাছ চাষিদের পুকুর ও ঘের ভেসে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখরিবাড়ি, টেপাখরিবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশা চাপানি ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার এবারের বন্যায় পানিবন্দি ছিল। তাদের অভিযোগ, এখনো সরকারি কোনো সহযোগিতা পাননি। তারা ত্রাণ নয়, বরং তিস্তা তীর রক্ষা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান চান।পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছরই বন্যা আসে, ফসল নষ্ট হয়। এবার চারবার পানি এসে সব শেষ করে দিল। সরকারি সাহায্য পাইনি, চাই তিস্তার ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা।’উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করা হলেও চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নে আরও কয়েক দিন লাগবে। সরকারি সহায়তা এলে তা সঠিকভাবে বিতরণ করা হবে।’ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘দ্রুত পানি কমায় তিস্তার তীরে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এজন্য আমরা প্রস্তুত আছি। পর্যাপ্ত জিওব্যাগ মজুত রয়েছে, যেখানে ভাঙন দেখা দেবে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান জানান, ‘ইতোমধ্যে জিআর হিসেবে ৩০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা পাওয়া গেছে। আরও সহায়তার জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫ হাজার ২০৯ জনকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।’