তদবির ছাড়াই পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনে নিয়োগ পেলেন ৪৫ জন
পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড় জেলা সদরের সুগার মিল কলোনিতে বেড়ে ওঠা খায়রুন নাহার ২০০১ সালে বাবাকে হারিয়ে মাকে নিয়ে ভাঙাচোরা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সংগ্রাম ও অভাবের মধ্যে টিউশন করে লেখাপড়া চালিয়ে তিনি পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ কয়েকটি পরীক্ষায় ভাইভা পর্যন্ত গেলেও চাকরি মেলেনি।তবে এবার পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে মাত্র ৫৬ টাকা খরচে চাকরি পেয়েছেন তিনি।খায়রুন বলেন, ‘চাকরি নিয়ে গুজব ছিল যে টাকা ছাড়া নিয়োগ হবে না। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভাইভা ফল প্রকাশের পর বিস্মিত হয়েছি। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রমাণ করেছে যে তদবির ও টাকা ছাড়া চাকরি সম্ভব।’নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৫ জনের অধিকাংশের জীবনেই আছে এমন কষ্টের গল্প। কেউ বাবা হারিয়েছে, কেউ মা ছাড়া বড় হয়েছে, কেউ টিউশন করে লেখাপড়া চালিয়েছে।হাফিজাবাদ এলাকার আরজিনা আক্তার বলেন, ‘দুই বছর অর্থাভাবে লেখাপড়া বন্ধ ছিল। টিউশন করে শেষ করেছি। বিনা টাকায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছি।’আহম্মদনগর এলাকার সাগর হোসেন ও ফুটকিবাড়ির হাসানুর রহমানও দীর্ঘ সংগ্রামের পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেছেন। আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর মেধাভিত্তিক নিয়োগের বড় উদাহরণ এটি।’পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী জানান, ‘মোট ১১টি পদে ৪৬ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রায় পাঁচ হাজার প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৩২২ জন, ভাইভাতে উত্তীর্ণ হন ৪৬ জন, এর মধ্যে ৪৫ জন যোগদান করেছেন।’