• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৮ই ভাদ্র ১৪৩২ বিকাল ০৩:১৬:৪১ (02-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

দেশে থাকার পরও গ্রেফতার হচ্ছে না নারায়ণগঞ্জের সেলিম ওসমান

২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১০:৪৫:২৩

সংবাদ ছবি

স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ: গণঅভ্যুত্থানের আগে নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত ওসমান পরিবারের সদস্য সাবেক এমপি সেলিম ওসমান, শামীম ওসমান ও প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমান এই দুর্ধর্ষদের নাম শুনলে একদা নারায়ণগঞ্জ শহরে ‘কাঁপন’ ধরত। 
এই পরিবারের অন্যতম সদস্য যিনি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো নিয়ন্ত্রণ করে সেখানে ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ ক্যাডার বাহিনী দ্বারা লুটপাটে শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিতেন জাতীয় পার্টির নেতা ও সংগঠনটির মনোনীত সাবেক সাংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।

এদিকে সেলিম ওসমানের যে সকল ক্যাডার বাহিনী ছিল তারাই শামীম ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমানের ক্যাডার বাহিনী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তা ছাড়া সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেলিম ওসমান। তার লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে পরিচিতি সদর-বন্দরের ৭টি চেয়ারম্যান ও বন্দরের ৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলের এবং জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলা চালিয়ে ছিল।

যাকে ঘিরে গত ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে রোষানলে পরে এখন ওসমান রাজ্যের নীরবতা। দুই ভাই ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সব লাপাত্তা। তাদের বাপ-দাদার রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও স্মৃতিময় ঐতিহাসিক বাড়িগুলো এখন সুনসান, জীর্ণ। ইতোমধ্যে দেশের বাহিরের বিভিন্ন স্থানে শামীম ওসমানের ভিডিও এবং ছবি দেখা গেলে ও তা ছাড়া আজমেরী ওসমানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেলেও সেলিম ওসমান পুরোই লাপাত্তা রয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সেলিম ওসমান খুলনা এবং ঢাকায় অবস্থানরত রয়েছে। কিন্তু গত ১ বছরেও তাকে এখনো গ্রেফতারের আওতায় আনা হয়নি যা নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন। এদিকে পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মতো কঠোর কোন একশ্যান না থাকায় বর্তমানে নানা লবিংয়ে আবারো আওয়ামী লীগের সাথে লাগায়ো ভাবে জোট থাকার মতো অন্য কোন দলেল সাথে জোটে যেতে চাইছেন।

এদিকে গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর। এ ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। যেখানে জাতীয় পার্টি নেতা জি. এম কাদেরের পরোক্ষ ইন্দন রয়েছে। এদিকে ভিপি নূরের উপর বর্বরোচিত হামলায় সারা দেশ জুড়ে সকল রাজনৈতিক দলের তীব্র নিন্দ্রা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। তা ছাড়া জেলায় জেলায় বিক্ষোভ ও অবরোধ চলছে।

এমতাঅবস্থায় নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে পরিচিত সেলিম ওসমান এখনো ইন্ধন নিয়ে বন্দরে বিভিন্ন ঝটিকা মিছিলসহ নারায়ণগঞ্জকে অস্মৃতিশীল করার চেষ্টায় মগ্ন হয়ে পরেছেন। তা ছাড়া সূত্র মতে জানা যায়, ছাত্র হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জে অর্ধশত এর অধিকার মামলার আসামি হয়ে ও দেশে বর্তমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সেলিম ওসমান এখনো দেশে অবস্থানরত রয়েছেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও রয়েছেন। তা ছাড়া সেলিম ওসমান গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ রাজনৈতিকবীদসহ তার দ্বারা নির্যাতনের শিকার বহু ব্যবসায়ী।  

সূত্র বলছে, কুখ্যাত সন্ত্রাসী জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ৭২টি ব্যবসায়ী সংগঠন শুধু জিম্মি করে নয় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন টেন্ডারবাজি, আইনজীবী সমিতি, সদর-বন্দরের সকল স্কুল-কলেজের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন এই দুর্ধর্ষ সেলিম ওসমান। তার নির্যাতনের খড়্গ পোহাতে হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের। এদিকে ২০১৪ সালে তৎকালীন জাতীয় পার্টির এমপি একেএম নাসিম ওসমান মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের কোঠায় সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সদস্যের দায়িত্ব পান।

পরবর্তীতে সেলিম ওসমানের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে এক দিকে সদ্য গত হওয়া সাংসদের ছোট ভাই হিসেবে ভক্তদের সহানুভূতি ও অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থনে সে যাত্রা পার হয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের বড় থেকে বড় ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএ সেই ২০১০ সাল থেকে এককভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ ওসমান পরিবারের সেলিম ওসমানের দখলে ছিল।  

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স দখলে ছিল সেলিম ওসমান তথা ওসমান পরিবারের আজ্ঞাবহ কর্মচারী খালেদ হায়দার খান কাজলের দখলে।  এছাড়া  নারায়ণগঞ্জ ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশন ছিল সেলিম ওসমান-শামীম ওসমানের আরেক মাসেল ম্যান লিটন সাহার দখলে, নারায়ণগঞ্জ হোসেয়ারি সমিতি সেলিম ওসমানের কল্যাণে দখলে ছিল নাজমুল আলম সজলের। মূলত এসব সংগঠনে নির্বাচন তো দূরের কথা সিলেকশনই ছিল মূল কথা।

২০১০ থেকে যারাই এসব বড় বড় ব্যবসায়িক সংগঠনে স্থান পেয়েছে তারা সবাই ছিল সেলিম ওসমান অনুগত। তা ছাড়া এই সেলিম ওসমান এককভাবে সকল ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতেন এবং সেখান থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি করতেন। এর পাশাপাশি শামীম ওসমানসহ ভাতিজা আজমেরী ওসমান। সেলিম ওসমানের নামে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর ব্যবসায়ীদের খড়্গ লাগিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি করতেন। তার নির্যাতনে নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছে বহু ব্যবসায়ী। 

তা ছাড়া বন্দরের সেলিম ওসমান কয়েকটি স্কুল স্থাপন করে সেগুলো নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া এই সেলিম ওসমানের নিয়ন্ত্রণেই ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি যা বর্তমান ওসমান মুক্ত রয়েছে। তা ছাড়া এই সেলিম ওসমানের দ্বারা নারায়ণগঞ্জের ৭২টি ব্যবসায়ী সংগঠনের ব্যবসায়ীরা নির্যাতিত শুধু তাই নয় নারায়ণগঞ্জের বহু সরকারি দপ্তর, স্কুলকলেজের প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ সকলেই তার দ্বারা নির্যাতনের শিকার। 

এদিকে গত ৫ আগস্টের পূর্বের সময় পর্যন্ত অসুস্থ থেকে ও তার লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা ছাত্র-জনতার উপরে গুলি চালিয়ে হত্যা করে ও সেই শত শত মামলার আসামি হয়ে ও দেশে অবস্থান করে গ্রেফতার এড়িয়ে রয়েছেন সেলিম ওসমান। বর্তমানে সমালোচনা উঠছে কোনো ক্ষমতার জোরে এখনো সেলিম ওসমানকে গ্রেফতার করা হচ্ছে সেই সালোচনা ধারাবাহিকভাবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক-সদস্য সচিব উঠালে ও সর্বশেষ সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে এখনো কোনো জরুরি পদক্ষেপ আসেনি। যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ও নারায়ণগঞ্জবাসীর জনমনে ক্ষুদ্ধতা বিরাজ করছে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







সংবাদ ছবি
নুরকে দেখতে ঢামেকে মির্জা ফখরুল
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ১২:৪২:০০